পাবনা পৌর এলাকার চাঞ্চল্যকর কিশোর আরাফাত হোসেন নূর (১৮) হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্দমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী। ০৬ এপ্রিল (রবিবার) দুপুরে নিহত নূরের এলাকা থেকে বেনার ফেসটুন নিয়ে স্বজন ও এলাকাসী এই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল নিয়ে বিক্ষোভকারীরা পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে মানবন্ধনে করেন। মানবন্ধনে নিহত নূরের স্বজন ও এলাকাবাসী হত্যাকারীদের নানা অন্যায় কুকর্মের বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা জেলা প্রশাসকের নিকট স্বরক লিপি দিতে গেলে তাদের বাধা প্রদান করেন পুলিশ। এসময় বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে পরলে জেলা প্রশাসন কার্যলয়ের প্রধান ফটক খুলে দেয়া হয়। পরে তারা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্বারক লিপি প্রধান করেন। এসময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসন এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার আশ্বাস প্রদান করেন।
বিক্ষোভ মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি ও সন্ত্রাসী শহীদুল মেম্বার তার জামাতা কাদের, মানিক লালন ও নাঈমের নেতৃত্বে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে বলে জানান তারা। এই সন্ত্রাসীরা এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য কিশোর নাঈমকে হত্যা করেছেন বলে জানান তারা।
প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল (বুধবার) রাতে পূর্বশত্রুতা ও আঞ্চলিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পাবনা পৌর দক্ষিণ রাঘবপুর অনন্ত বাজার এলাকায় হরিজন কলনীর সামনে কিশোর নাঈমকে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে ও ছুড়িকাঘাত করে হত্যা করে দূর্বৃত্তরা। ঘটনার পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এই হত্যাকান্ডের ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা হরিজন কলনীর সামনে ও প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। নিহত আরাফাত পৌর এলাকার দক্ষিণ রাঘবপুর মহল্লার ওমর আলীর ছেলে। এই ঘটনায় নিহত নূরের মা বাদী হয়ে পাবনা সদর থানাতে ১৩ জনে নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। তবে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায জড়িত কাউকে এখন গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে এলাকার শহিদুল মেম্বারের সঙ্গে আরাফাত হোসেন নূরের ঝামেলা চলছিল। একাধিকবার ছোটোখাটো মারামারির ঘটনাও ঘটেছে। বুধবার মধ্যরাতে কলোনি এলাকায় আরাফাতকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা বেশ কয়েকজন মিলে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে ও ছুড়িকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পরে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, ঘটনাটি পূর্বশত্রæতার জের ধরে হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত নূরের মা বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকেই আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। আশা করছি খুব দ্রæতই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো আমরা।